Monday, August 17, 2009

বিডিআর বিদ্রোহে দেশের সার্বভৌমত্বের শত্রুরাই লাভবান হয়েছে


সাড়ে ৫ মাস পর পুনরায় দরবার অনুষ্ঠিত

।। ইত্তেফাক রিপোর্ট ।।

বিডিআর বিদ্রোহে দেশের সার্বভৌমত্বের শত্রম্নরাই লাভবান হয়েছে। তবে এই শত্রম্ন কারা তা এখনও সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পিলখানা হত্যাকান্ডে সুবিচার পেতে সঠিক তথ্য দিতে হবে। ২৫ ও ২৬ ফেব্রম্নয়ারি বিডিআর বিদ্রোহ ও হত্যাকান্ডের পর গতকাল সোমবার সকালে পিলখানায় মহাপরিচালকের দরবার অনুষ্ঠানে বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম বিডিআর সদস্যদের উদ্দেশে এ কথা বলেন।

২৫ ফেব্রম্নয়ারি পিলখানায় দরবার শুরম্ন হলে বিদ্রোহের সূত্রপাত হয়। ঐ দরবার ৫ মাস ১৮ দিন পর গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় পুনরায় শুরম্ন হয়। দরবার মঞ্চে ছিলেন বিডিআর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মইনুল ইসলাম ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওবায়দুল হক। মঞ্চের সামনে মেঝেতে সারি হয়ে বসেছিলেন প্রায় আড়াই হাজার বিডিআর সদস্য। এক পাশে চেয়ার দিয়ে সেনা কর্মকর্তাদের বসার ব্যবস্থা করা হয়। বিডিআর সদস্যরা বিডিআরের পোশাক পরিধান করলেও সেনা কর্মকর্তারা সেনাবাহিনীর পোশাক পরিধান করেন।

দরবারের শুরম্নতে বিদ্রোহে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের প্রতি শোক প্রকাশ করা হয়। বিডিআর মহাপরিচালক বলেন, ২৫ ফেব্রম্নয়ারি ঘটে যাওয়া ঘটনা বাংলাদেশসহ পৃথিবীর ইতিহাসে একটি জঘন্য ঘটনা। আনত্মর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ শত্রম্নবিহীন নয়। তিনি বিডিআর সদস্যদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, এ ঘটনায় বিডিআর সদস্যরা কি লাভবান হয়েছেন? দরবার হলে বসে থাকা বিডিআর সদস্যরা সমস্বরে বলেন,‘না’। ২৫ ও ২৬ ফেব্রম্নয়ারির ঘটনার পর বিডিআর সদস্যরা স্বাভাবিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন কিনা-এ ব্যাপারে মহাপরিচালক জানতে চাইলে দরবার হলে অবস্থানরত সকল বিডিআর সদস্য নিশ্চুপ থাকেন। মহাপরিচালক বলেন, অস্ত্রই আমাদের শক্তি। অস্ত্র দিয়ে সীমানত্ম পাহারা দেয়া আমাদের কাজ। কিন্তু এই অস্ত্র আজ সেনাবাহিনী ও পুলিশের হেফাজতে। এটা দুঃখজনক, লজ্জাজনক। আমাদের মধ্যে ঈমানের দুর্বলতা ছিল বলেই সেদিন বিদ্রোহের ঘটনা ঘটে এবং আজ আমাদের এই পরিণতি হয়েছে। মহাপরিচালক বলেন, ২৫ ফেব্রম্নয়ারির ঘটনার এখনও কোন সদুত্তর পাওয়া যায়নি। ঐদিন সবাই অস্ত্র ধরেনি। কাউকে কাউকে অস্ত্র ধরতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, ঐ দিনের ঘটনা সফল হয়েছে কি? এর জবাবে বিডিআর সদস্যরা জানান, না সফল হয়নি। তিনি বলেন, সেনা কর্মকর্তাদের বিরম্নদ্ধে অপবাদ ছড়ানো হয়েছে। তাদেরকে দালাল বলা হয়েছে। প্রকৃত পড়্গে স্বাধীনতাবিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধের সময় সেনা কর্মকর্তা ও বাংলার মুক্তিযোদ্ধাদের বিরম্নদ্ধে অপবাদ রটিয়েছিল। কি এমন ঘটনা ঘটেছিল যে, সেনা কর্মকর্তা ও বিডিআর সদস্যদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করা হল! এ হত্যাকান্ডের বিচার অব্যশই করা হবে। তিনি সবার উদ্দেশে বলেন, আপনারা কি চান, এ বিচার হওয়া উচিত? উপস্থিত বিডিআর সদস্যরা একস্বরে চিৎকার করে বলেন, ‘হ্যাঁ বিচার হওয়া উচিত।’ মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সেনা কর্মকর্তারা নেতৃত্ব দিয়েছেন। বিডিআরকেও নেতৃত্ব দিচ্ছে সেনা কর্মকর্তারা। বিডিআরের ভিতর আস্থাহীনতা কেটে যাচ্ছে। শিগগির বিডিআর ঘুরে দাঁড়াবে। বেলা ১২ টায় দরবার শেষ হয়। পরে বিডিআর মহাপরিচালক সাংবাদিকদের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিডিআরের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন। এক প্রশ্নের জবাব তিনি বলেন, সব দেশের সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে কোন-না-কোন অপশক্তি থাকে। বিডিআর বিদ্রোহে দেশ ও দেশের বাইরে এসব শত্রম্নই লাভবান হয়েছে। তাই এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। বিডিআরের ভিতর অনাস্থার ভাব অনেকটা কেটে গেছে। ঢাকার বাইরে অনেক জায়গায় বিডিআর সদস্যরা অস্ত্র নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। বিদ্রোহীদের বিচার কোন আইনে হবে-এ ব্যাপারে তিনি বলেন, এটা সরকারের সিদ্ধানত্ম। সরকার যে সিদ্ধানত্ম দিবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Source : http://www.ittefaq.com/content/2009/08/18/news0834.htm

No comments:

Post a Comment