Thursday, August 6, 2009

শবে বরাতে করণীয় ও বর্জনীয়...

মুফতী মুফীযুর রাহমান

মহান আলস্নাহ পাকের অশেষ রহমত ও দয়ার মধ্য দিয়েই কেটে যায় জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত। বান্দা যদিও সর্বদা আলস্নাহর অবাধ্যতায় ব্যসত্ম কিন্তু অসীম দয়ালু আলস্নাহ পাক বান্দার অবাধ্যতার প্রতিদান না দিয়ে তাকে তার দয়ার দ্বারা ঘিরে রেখেছেন। মহান আলস্নাহ পাকের অবাধ্যতা করা সত্ত্বেও তাঁর-ই-দয়া ও রহমত ও নেয়ামত দ্বারা প্রতিটি মানুষের জীবন ভরপুর। আলস্নাহ পাক পৃথিবীতে জ্বীন ও মানব জাতিকে একমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্য-ই সৃষ্টি করেছেন। ইরশাদ হচ্ছেঃ আমি জ্বীন ও মানব জাতীকে একমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি- (আল কোরআন)। একজন মানুষের সম্পূর্ণ জীবন মহান আলস্নাহ পাকের ইবাদতের মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হওয়াটাই কাম্য। তাইতো বান্দাকে ইবাদতের প্রতি উৎসাহিত করার লড়্গ্যে-ই বৎসরে এমন কিছু রজনী রয়েছে যাতে বান্দার নেক আমলের মূল্যায়ন আলস্নাহর নিকট তুলনামূলক অনেক বেশী। যাতে তওবাকারীর তওবা কবুল করেন। সেই রজনীগুলোর মধ্য থেকে শব-ই-বরাত হল অন্যতম।


শব-ই-বরাতের করণীয়:

যখন শা’বান মাসের অর্ধেকের রজনী আসে (১৫ তারিখ রাত্র) তখনি সে রাত্রে তোমাদের করণীয় হল তোমরা রাত্রে আলস্নাহর ইবাদত কর এবং পরদিন করণীয় হল তোমরা দিনে রোয়া রাখ। (আল হাদীস)।

তাছাড়া ১) সমসত্ম রাত্র জাগরণ করা

২) গোনাহ থেকে মাফ চাওয়া, রিযিক প্রার্থনা করা। রোগ মুক্তি ও ইত্যাদি কামনা করা।

৩) এ রাত্রে কবর জিয়ারতের জন্য কবরস্থানে যাওয়া।

শবে বরাতের বর্জনীয়: রাসুল (সা:) বলেছেন, যে আমার এই দ্বীনের মধ্যে যা নেই তার আবিষ্কার করে তা হল বেদআত (আল হাদীস)।

বর্জনীয় ঃ ১। অতিরিক্ত আলোক সজ্জাকরা, ২। আতশ বাজী ফুটানো, ৩। কবরে বাতি দেয়া, ৪। অপচয় করা ইত্যাদি।

১৪. শবে বরাতের বরকত লাভের পূর্বশত

কুরআন ও হাদীসের আলোকে যে কোনো নেক আমল বা ইবাদত আলস্নাহর দরবারে কবুল হওয়ার জন্য তিনটি মৌলিক শর্ত রয়েছে:

(১) বিশুদ্ধ ঈমান ও ইখলাস: শির্‌ক, কুফ্‌র ও নিফাক-মুক্ত বিশুদ্ধ ঈমান সকল ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্ব শর্ত। উপরন্তু ইবাদতটি পরিপূর্ণ ইখলাসের সাথে একমাত্র আলস্নাহর সন্তুষ্টির জন্য হতে হবে। আলস্নাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো রকম উদ্দেশ্যর সামান্যতম সংমিশ্রণ থাকলে সে ইবাদত আলস্নাহ কবুল করবেন না। (২) সুন্নাতের অনুসরণ: কর্মটি অবশ্যই রাসূলুলস্নাহ এর সুন্নাত বা পদ্ধতি ও রীতি অনুসারে পালিত হতে হবে। যদি কোনো ইবাদত তাঁর শেখানো ও আচরিত পদ্ধতিতে পালিত না হয়, তাহলে যত ইখলাস বা আনত্মরিকতাই থাক না কেন, তা আলস্নাহর দরবারে কোনো অবস্থাতেই গৃহীত বা কবুল হতে না।

(৩) হালাল ভড়্গণ: ইবাদত পালনকারীকে অবশ্যই হালাল-জীবিকা-নির্ভর হতে হবে। হারাম ভড়্গণকারীর ইবাদত আলস্নাহর দরবারে কবুল হয় না।

১৪.২. শিরক বর্জন

আমরা দেখেছি যে, মধ্য-শাবানের রাত্রি বা লাইলাতুল বারাআতের ড়্গমা ও বরকত লাভের জন্য সহীহ হাদীসে দুটি শর্ত উলেস্নখ করা হয়েছে: (১) শিরক থেকে মুক্ত হওয়া ও (২) সিংহা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত হওয়া। মানুষের জীবনের ভয়াবহতম পাপ হলো শিরক। অন্যান্য সকল পাপের সাথে এর পার্থক্য হলো: (১) সকল পাপই আলস্নাহ ইচ্ছা করলে তাওবা ছাড়াও ড়্গমা কতে পারেন, কিন্তু পরিপূর্ণ তাওবার মাধ্যমে শিরক বর্জন ছাড়া শিরকের পাপ তিনি ড়্গমা করেন না। (২) সাধারণ পাপের কারণে মানুষের নেক কর্ম ধ্বংস হয় না, কিন্তু শিরকের কারণে মানুষের সকল নেক কর্ম বিনষ্ট হয়ে যায়। (৩) সকল পাপে লিপ্ত মানষেরই জান্নাতে যাওয়ার আশা থাকে, কিন্তু শিরকে লিপ্ত মানুষের জন্য আলস্নাহতায়ালা তার জান্নাতকে চিরতরে হারাম করেছেন এবং তার চিরস্থায়ী নিবাস জাহান্নাম।

গ্রন্থনাঃ

আবদুলস্নাহ আল বাকী

Source : http://www.ittefaq.com/content/2009/07/31/news0585.htm

No comments:

Post a Comment